রিভিউ টপিক : আজকের ভ্রমণ গল্পতে আমি একটা সুন্দর ও গতিসম্পন্ন নাইট কোচ বাস জার্নি সম্পর্কে কথা বলবো, আমি মুলত হানিফ এন্টারপ্রাইজ এর নন এসি বাস ভ্রমণ করে চট্টগ্রাম থেকে পঞ্চগড় যাওয়ার জার্নি অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আমার এই রিভিউটি আপ্লোড করা হয়েছে jounykothabd.com ওয়েবসাইটে এবং এইটা বাস জার্নি রিভিউ - ০৫
ছবি কারিগর - শাহেদ আহমেদ |
রিভিউ ক্যাটাগরি : বাস ভ্রমণ
রিভিউ নাম্বার : ০৫
বাস কোম্পানীর নাম : হানিফ এন্টারপ্রাইজ
বাসের রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার : ঢাকা মেট্রো ব ১৫-৬৬৫৬
রুট : চট্টগ্রাম - পঞ্চগড়
ভ্রমণের তারিখ : ৪ঠা এপ্রিল ২০২৩
চট্টগ্রাম - পঞ্চগড় বাস জার্নি রিভিউ - ০৫
আসসালামু আলাইকুম আমি সাদমান রাফিউর রহমান,আমি থাকি চট্টগ্রামে পড়াশোনার সুবাদে, তবে পরিবার থাকে ঢাকায়। আজ আমি আপনাদের নিকট আমার জীবনে মনে রাখার মতো ট্রাভেল এক্সপেরিয়েন্স শেয়ার করবো, যদিও লেখাটি বেশ বড় হবে তবে আশা করি পুরো ঘটনাটি পড়বেন এবং আপনাদের ভালো লাগবে (ইনশাআল্লাহ)।
দিনটা ছিল এপ্রিল মাসের ৪ তারিখ। সে দিন আমার ভার্সিটি রমজান ও পবিত্র ঈদুল ফিতরের উপলক্ষে ছুটি দিলো। আমার সবসময় প্লান থাকে বড় বন্ধ পেলেই চট্টগ্রাম থেকে লং রুটের বাস ধরে দূরের কোনো জেলা ঘুরে এসে বাসায় তথা ঢাকায় ব্যাক করা - এই রিভিউটি আপ্লোড করা হয়েছে journeykothabd.com ওয়েবসাইটে - তো এইবারও সেই নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটলো না। প্লান করেছিলাম চট্টগ্রাম থেকে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর ঘুরে ঢাকায় আসবো। কিন্তু ভার্সিটি ছুটির পর যাত্রার দিনের দুপুরে হঠাৎ প্লান চেঞ্জ হয়।
তখন কি মনে করে পঞ্চগড় যাবার ভুত চাপে। তো যাই হোক বাস লাভার রবিউস সানি জিম ভাই (ইউটিউব চ্যানেল - ট্রাভেল উইথ জিম) ভাইয়ের সাথে বেশ কিছুক্ষন কথা বলি আর কিছু সাজেশন নেই। ভাইয়ের সাজেশন ছিল পঞ্চগড় রুটের হানিফ ৬৬৫১ বাসটা পাইলে সেই জার্নি হবে। যদিও ৬৬৫১ সেদিন ওইপাড়ে ছিল তাই পড়লো না, কিন্তু ৬৬৫৬ কি দেখাইলো যা সারা জীবনের জন্য মনে রাখার মতো। তো যাই হোক, এরপর পঞ্চগড়ের বন্ধু আজমীরকে জানিয়ে দেই আমি পঞ্চগড় আসছি। এই বলে দুপুর আড়াইটার পর আমার বাসা তথা হাটহাজারী থেকে বের হই। তারপর দ্রুতযান বাসে করে চট্টগ্রাম শহরে আসতে ১ ঘন্টা সময় লাগলো। তখন হঠাৎ করে শরীর খারাপ লাগছিল আর ভাবছিলাম লং জার্নি কমপ্লিট করতে পারবো তো। দ্রুতযান আমাকে একঘন্টার মধ্যে চট্টগ্রামের দামপাড়া বাস টার্মিনালে নামায় দেয়। দামপাড়া গিয়ে প্রথমে শ্যামলী এন আর ট্রাভেলসের কাউন্টারে গেলে তারা জানায় যে, তাদের পঞ্চগড় পর্যন্ত কোনো বাস সার্ভিস নেই।
তখন শ্যামলী পরিবহন তথা এস পি সেকশনের কাউন্টারে গেলে তারা একপর্যায়ে আমার কাছে টিকিটের দাম ১২০০ টাকাতেও রাজি হয়ে যায়। তারপর আবার কি মনে করে হানিফের কাউন্টারে যাই এবং তারা ১৫০০ টাকার এক পয়সাও কম রাখবে না বলে দেয়। তার উপর এ২ সিট খালি ছিল। মূলত একজন বাস লাভার হিসাবে এ২ সিটের লোভেই ৩০০ টাকা বেশি দিয়ে হানিফে উঠা। তাছাড়াও হানিফের লং রুটে আমার আগে চট্টগ্রাম থেকে রাজশাহী পযন্ত যাবারও অভিজ্ঞতা আছে, সেটিও জোস জার্নি ছিল, অন্য একদিন শেয়ার করবো নি।
তবে দামপাড়া হানিফের কাউন্টারে ওয়াশরুমের সুব্যবস্থা নেই যা আমি আশা করতে পারি নাই হানিফের মতো কোম্পানির কাছে। কিছুক্ষন পর কোস্টার এলো কর্নেলহাটে নিয়ে যাবার উদ্দেশ্যে, মূলত লং রুটের বাস কর্নেলহাট থেকে ছেড়ে যায়।
কর্নেলহাট থেকে বাস ছাড়ার সময় ছিল সাড়ে ৬টায় কিন্তু ইফতারির জন্য আর কিছু কাজের কারনে ছাড়তেই সাড়ে ৭টা বেজে যায় - এই রিভিউটি আপ্লোড করা হয়েছে journeykothabd.com ওয়েবসাইটে - আমাদের আগে কুড়িগ্রামের হানিফ (ঢাকা-রংপুর লাইনের গাড়ি ওটা তবে সেইদিন সে প্রক্সি মারতে এসেছিল) আর আমার এক্স টুরমেট সেই রাজশাহীর হানিফ ১৫-৩৮১৪ ছেড়ে যায় ইফতারের পরে কিন্তু ইফতারের আগে একই রুট তথা পঞ্চগড়-চট্টগ্রাম রুটের শ্যামলী এস পি সেকশনের ১৫-১*** সিরিজের বাস আমাদের এক ঘন্টা আগে ছেড়ে যায়। বাসটি ছিল ছাদভর্তি মাল আর কন্ডিশনও খুব বাজে অবস্থা ছিল।মনে মনে নিজেকে সান্ত্বনা দিলাম যাক ৩০০ টাকা বাচাইতে গিয়ে এই বাসে উঠা লাগে নাই। তবে এই বাসটা ছিল কঠিন প্লেয়ার যার কথা আবারও আসবে। অবশেষে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ বাসটি চট্টগ্রাম থেকে পঞ্চগড়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় বাস ছাড়া থেকে একেবারে শেষ স্টপেজ পর্যন্ত ৭০০ কিঃমিঃ জার্নিতে আমি বেশ কটি পর্ব বা ফেজে বিভক্ত করেছি।
১ - প্রথম ফেজ ( চট্টগ্রাম টু কুমিল্লা হোটেল ব্রেক ) :
কর্নেলহাট ছাড়ার পর ওই টাইমে লং রুটের বাস ছাড়া ঢাকা রুটের ভালো বাসের সংখ্যা খুবই কম তাই বলতে গেলে তখন সামনে কোনো ভাল বাস পড়ে নি।ভাটিয়ারী আসার আগ দিয়ে শান্তি এক্সপ্রেসের(সম্ভবত ময়মনসিংহ রুটের) বাসকে অনায়েসে ওটি দেই।দারোগাহাটিতে প্রায় এক ঘন্টার মতো জ্যামেই আটকে যায় ট্রাকের সিরিয়ালের কারনে,সীতাকুন্ড ক্রস করার পর ১০-১৫ মিনিটের আরেক জ্যাম।এরপর রাস্তা ফাকাই ছিল আর বেশ কটা সেমি লোকাল লং রুটের বাস ওভারটেক দেই।আর হ্যা রমজান মাস ছিল বলে ভালো কোম্পানির বাস যাত্রী সংকটের কারনে বেশ কটা ট্রিপ অমিট করে দেয় এবং যে কারনে সেই দিন লং রুটের ভালো বাসগুলোও খুব কম ছিল যা হোটেল ব্রেকের সময় চোখে পড়ার মতো ছিল এবং হোটেল ব্রেকে আমি চেকারকে এ কথা জিগাস করলে সেও একই কথা বলে।আর এভাবেই কুমিল্লা নূরজাহান হোটেলে পৌছাই খুব সম্ভবত ১০ টার আশপাশে
হোটেল ব্রেকের সময় কি কি করলাম :
আমি সাধারনত লং রুটের জার্নি দেবার সময় ভারি কিছু খাই না তো এইবারও তার ব্যত্যয় ঘটেনি।একটা চিপস আর কেক খেলাম।তারপর আশপাশে বাস লাভিং টুকটাক করলাম।আমাদের ১৫-২০ মিনিট আগে ছেড়ে আসা রাজশাহীর হানিফ ১৫-৩৮১৪ র সাথে আবার দেখা।পাশে জয়পুরহাট-হিলির শ্যামলী আর মেহেরপুরের শ্যামলী ছিল আর হানিফ ছিল দুটো,,,ধরতে গেলে ওই সময়ে এ ৪ টা বাস ছাড়া আর কোনো বাস ছিল না নূরজাহানে।একটা সময়ে বাসের পাইলটের সাথে বেশ কিছুক্ষন আড্ডা দেই।উনার নাম আনোয়ার ভাই,বাড়ি হিলিতে আর লং রুটেই তথা চট্টগ্রামের সাথে উত্তরবঙ্গ রুটে তার এক্সপেরিয়েন্সই ১৬ বছর ধরে।প্রথমে তিনি কেয়া পরিবহন চালাইতো এরপর শ্যামলী চালিয়েছিলেন আর এখন হানিফ। আর যখন তিনি শুনেছেন আমি বাস লাভার তখন আরোও আন্তরিক ব্যবহার করেছিলেন তো একে একে প্রথমে হানিফ দেন দুই শ্যামলী ছেড়ে যাবার পর সবার শেষে আমরা ছেড়ে যাই।
২ - দ্বিতীয় ফেজ ( কুমিল্লা টু ঢাকা ) :
যাত্রাবাড়ির আগ পযন্ত রাস্তা বেশ ফাকাই ছিল।ক্যান্টরমেন্ট ক্রস করার পর আমাদেরকে ট্রাকের ফাদে ফেলে এক ইকোনো ওটি দিয়ে যায় আর ওই ইকোনোতে আবার দুই বাস লাভার বসে ভিডিও করতেছিল।এই দেখে আমাদের পাইলটের মাথা খারাপ হয়।ইকোনো আর হানিফের তুমুল পাড়াপাড়ি এখানেই শুরু হয়ে যায় - এই রিভিউটি আপ্লোড করা হয়েছে journeykothabd.com ওয়েবসাইটে - এক সময়ে দুই বাস মিলে সৌদিয়া সিল্কি আর একে ট্রাভেলসকে ওটি দেই।আর এভাবেই একটা পর্যায়ে ইকোনোও আমাদের কাছে হার মানতে বাধ্য আর আমাদের পাইলট ইকোনোর হেল্পারকে কিছু একটা বলে।মেঘনা ব্রিজ ক্রস করার পর মেহেরপুরের শ্যামলী আর কাচপুরের পর হিলির শ্যামলীকে ওটি দেই।এরপর ১২ টার দিকে যাত্রাবাড়ী আসলেও ওইখানে বেশ কিছুক্ষন জ্যামে পড়া লাগে। জ্যাম ছেড়ে ঢাকার শহরের ভিতরেও আসাদগেটে আবার কোন এক শ্যামলী(সম্ভবত সিলেট রুটের) রানিং এ ওটি দেয়।আর এভাবেই কিছুক্ষন পর ওভি পাম্পে ৫ মিনিটের ব্রেক দেয় এবং আবারও রাজশাহীর হানিফের সাথে দেখা
৩ - তৃতীয় ফেজ ( ঢাকা টু সিরাজগঞ্জ ফুড ভিলেজ হোটেল ) :
এইবার এই হানিফের বাম্পার ধরেই ওভি পাম্প ত্যাগ করলো।এখন শুরু হইছে পোকের অত্যাচার। সামনে কেউ ইশারা দিতেই পোক তুলে যা একেবারে পঞ্চগড় পযন্ত চলমান ছিল,,যা বিষয়টা সত্যিই বিরক্তিকর।চট্টগ্রাম সাইডে শুধুমাত্র হোটেলের পর নূরজাহানের দিকে একবার পোকের জন্য দাড়ায়ছিল আর এখন ধরতে গেলে লোকাল বাসের মতো,,এমনকি বনোটেও এক লোক, তার স্ত্রী ও বাচ্চাকেও বসায় নিয়ে গেছিলো হাটিকুমরুল পযন্ত - এই রিভিউটি আপ্লোড করা হয়েছে journeykothabd.com ওয়েবসাইটে - তো যাই হোক, পোকের জন্য কিছুক্ষন পর পর ওই হানিফের বাম্পার হারাই তো আবার ধরি। সামনের রাজশাহীর হানিফও কম তাউরাশ না যা আগে একবার উঠে বুঝেছিলাম তার ধারা সেদিনও ছিল।দুই হানিফ মিলে চন্দ্রার আগ দিয়ে শামীমের বরিশাল-ময়মনসিংহ রুটের বাস আর আহাদকে ওটি দেই।তারপর দুই হানিফের কঠিন গতিযুদ্ধ।১১০-১২০+ ধরে টেনে যাচ্ছিলো টাংগাইল রোডে।সামনের হানিফ একদম রাস্তার মাঝ বরাবর চালাচ্ছিল যেন সে সাইডই দিবে না,,,এ অবস্থা দেখে আমাদের পাইলট ওভারপাসের নিচদিয়ে গিয়ে ওই হানিফকে ওটি দিলো অবশেষে।কিছুদূর যেতে শাহজাদপুর ট্রাভেলসের সিলেট-পাবনা রুটের বাস পাই।সে কিছুক্ষন তাফালিং করলেও একটা সময়ে হেরে যায়।
আসল খেলা তো ছিল যমুনা এপ্রোচ থেকেই।তখন বাসটির ভয়ংকর রূপ ফুটে উঠে।একে একে বেশ কটি রিস্কি ওটি দিতে থাকে আর একটি পর্যায়ে নাবিলের সাথে আমাদের প্রায় মুখোমুখি হতে গিয়েও বেচে যাই।সেতুর আগ দিয়ে আর পি নামে রাজশাহীর এক সেমি লোকালের সাথে বাজায় দেয় আর এ নিয়ে কিছুক্ষন গ্যাঞ্জাম চলে। তারপর সেসব মিটমাট করে যমুনা সেতুতে টোল দিয়ে সেতু পার হই। আমার কাছে রাতের যমুনা সেতুর সৌন্দর্য একটু বেশিই লাগে।চারপাশের সোডিয়াম বাতি সেতুকে কয়েকগুন সুন্দর করে তোলে আর পাশ দিয়ে ট্রেন গেলে তো কথাই নাই,,,যার সৌন্দর্যের ভাষা প্রকাশ করাই যায় না।
ব্রিজ ক্রস করার পর সেই চট্টগ্রাম-পঞ্চগড় রুটের শ্যামলীর সাথে দেখা,,ওই বাসের পিছন দিয়ে কালো ধোয়া বের হয়ে অবস্থা খারাপ। আর আমরাও পিছন থেকেই ওই বাসের ইঞ্জিনের বিকট আওয়াজ পাচ্ছিলাম।গাড়ির বয়স মাত্র ৬ বছর ছিল কিন্তু কন্ডিশন দেখে মনে হচ্ছিল ২৫ বছরের পুরানা বাস।শ্যামলী কতৃপক্ষর উচিত গাড়িগুলোর প্রতি ভালো মেইনটেইনেন্স নেওয়া।
যাই হোক ওই শ্যামলীও কম পাগলা ছিল না।সে ও আমরা মিলে বেশ কটা রিস্কি ওভারটেক দেই এবং ঠিক ফুড ভিলেজের আগ দিয়ে তাকে রানিং এ ওটি দিয়ে দেই।ওটি দেবার দু এক মিনিট পর সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুলের ফুড ভিলেজ প্লাসে সেহেরির বিরতি দেয়।আমাদের ঠিক বাম্পার কামড়ে সেই রাজশাহীর হানিফেরও এন্ট্রি হোটেলে।
ফুড ভিলেজ হোটেলেও ওইরকম হাল্কা কিছু খেয়ে বাস লাভিং করি।নির্ধারিত সময়ে আবার বাস ছেড়ে দেয়। ফুড ভিলেজের পর আবার সিরাজগঞ্জের চান্দাইকোনাতে ওভি হাইওয়ে ভিলাতে চেকার চেকিং আর ফজরের নামাজের ১০ মিনিটের ব্রেক দেয়।
৪ - চতুর্থ ফেজ ( সিরাজগঞ্জ টু রংপুর ) :
ব্রেকের পরেও আমাদের বাসের গতি একটুও কমেনি।বগুড়া শেরপুরের দিকে রাহাবার আর আহাদকে একসাথে ওটি দেই।আর ওইদিক থেকে মোকামতলা পযন্ত রাস্তার অবস্থা ভয়াবহ। তারপরেও পাইলট যা চালাচ্ছিল মনে হচ্ছিলো রোলার কোস্টারে আছি।বগুড়ার পর আবার সামনে দুই হানিফ সামনে দাঁড়ায়ছিল এবং সাথে আমরাও দাঁড়ায় যাই,মূলত চেকিং এর জন্য দাড়ায়,,,তারপর একসাথে তিন হানিফ ছাড়ে এবং এক পর্যায়ে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ওই দুই হানিফকে একসাথে রানিং এ ওটি দেয়।এইদিকে বলে রাখা ভালো যে গাইবান্ধা সাইড থেকে রংপুর পযন্ত রাস্তা এখন ভাল হয়ে গেছে।ভোর ৭ টার আগেই রংপুরের মর্ডানে ঢুকে যাই।তারপর রংপুর শহর হয়ে কিছুদূর গিয়ে আবার চেকিং এর জন্য দাঁড়ায়।
৫ - পঞ্চম ফেজ ( রংপুর টু পঞ্চগড়) :
রংপুর টু পঞ্চগড় ১২০ কিঃমি রোডে বাসটি কঠিন লেভেলের ভয়াবহ রূপ ধারন করে।সৈয়দপুর রোডে তখন বেশ থ্রি হুইলার আর লোকাল বাসের চাপ ছিল,এই রোডেই সে ৯০-১০০ ধরে চালাচ্ছিল এবং এইরকম ভাবে চালাতে গিয়ে একটা থ্রি হুইলারকে মারতে গেছিল প্রায়।এতোক্ষন যা চালিয়েছে তা বিষয় ছিল না কিন্তু এই ১২০ কিঃমিঃ রাস্তায় খুব রাফ চালিয়েছে এককথায়,যেমনটা আমরা ইটিএস টু গেমে বাস চালাই ঠিক ওইভাবে,,আর কিছু হইলেই হার্ড ব্রেক।আর এভাবেই চালিয়ে সৈয়দপুর, পাগলাপীর, দশমাইল, বীরগঞ্জ, ঠাকুরগাও, অটোয়ারি হয়ে ঠিক ৯ টার দিকে আমাকে পঞ্চগড় হানিফ বাস ডিপোতে নামায় দেয়। যাই হোক এখন পুরো জার্নির ভালো দিক ও খারাপ দিক এবং কিছু জিনিসের উপর রেটিং দিয়ে আমার রিভিউটা শেষ করে ফেলি।
বাস জার্নির ভালো/খারাপ দিক ও সার্ভিস রেটিং :
বাস জার্নির ভালো দিক :
১.বাসের সিট যথেষ্ট আরামদায়ক ছিল। চট্টগ্রাম সাইডের ১৫-৬*** পর থেকে যেসব বাস এসেছে ওইগুলার মতো শক্ত থাই সিট দেয় নাই।
২.বাসের স্টাফরা যথেস্ট আন্তরিক ছিলেন।
৩.বাস পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ছিল।
৪.বাসের কন্ডিশন অনেক ভালো ছিল। ওই বাসের ইঞ্জিন সাউন্ড আর পুশ ব্রেক এখনও কানে বাজে।
৫.অতিরিক্ত মালামাল ছাদে নেয় নাই, হানিফে সাধারণ দু/চারটা বাস ছাড়া আর এখন অন্যগুলোতে ছাদে মাল নেওয়ার ক্যারিয়ার নাই।
৬.সবচাইতে বড় কথা সময় মতো পৌছানোর অনেক আগেই পৌছায় দিছে।
বাস জার্নির খারাপ দিক :
১.লোকাল বাসের মতো প্রচুর পোক নিয়েছিলো।
২.পাইলট সাহেব অনেক দক্ষ মানুষ তার ড্রাইভিং স্টাইল দেখে বুঝেছি কিন্তু বেশ কয়েকবার রিস্কি ওভারটেক করতে গিয়ে এক্সিডেন্ট এর সম্মুখিন হতে হয়েছে, যেগুলো একেবারেই প্রয়োজন ছিল না। হয়তো সে দিন তার তাড়া ছিল খুব কিন্তু এইভাবে ড্রাইভিং করা ঠিক না।
৩.নাইটের বাস বা নাইট কোচ হিসাবে ডিপারের বদলে প্রচুর হর্ন ইউজ করেছে।
৪.মাঝে মধ্যে কয়েক জায়গায় কড়া হার্ড ব্রেক দিয়েছে।
৫.যেই রাস্তায় ৮০-র বেশি গতি তোলার প্রশ্নই উঠে না সেখানে ১০০ তুলেছে।
বাসের সার্ভিস রেটিং: সব মিলিয়ে আমি ০৮/১০ দিবো
মন্তব্য ও কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্যে কিছু কথা : সব কিছুই ঠিকঠাক ছিল কিন্তু এই রকম বেপরোয়া ড্রাইভিং আমার জীবনে আগে কখনও দেখি নাই। আগেই বলেছিলাম, মনে হচ্ছিল আমি নিজেই ইটিএস টু গেম খেলছি। কিন্তু গেম আর বাস্তব জীবনে অনেক ব্যবধান আছে। সেই সাথে হানিফের পোক ইস্যুর দিকে আরো কঠোর নজরদারি দেয়া লাগবে।
পুরো রিভিউটা মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ, রিভিউটা কেমন লাগলো, কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না কিন্তু।
বাস যাত্রী / রিভিউ লেখকের নাম : সাদমান রাফিউর রহমান ( আমাকে ফলো করতে আমার নামের উপর ক্লিক করুন এবং ফেইসবুকে যেয়ে ফলো করে দিন )
যেকোন প্রয়োজনে আমাকে মেইল করুন - ets2ridoy@gmail.com
0 Comments