লোকাল নন-এসি বাস ভ্রমণ | জাফলং থেকে সিলেট মাত্র ১ ঘন্টায় যাওয়ার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা | জাফলং - সিলেট লোকাল বাস | লোকাল বাস জার্নি রিভিউ - ০২

রিভিউ টপিক : আজকের ভ্রমণ গল্পতে আমি একটা সুন্দর বাস জার্নি সম্পর্কে কথা বলবো, আমি মুলত লোকাল গেইটলক নন-এসি বাস ভ্রমণ করে জাফলং থেকে সিলেট মাত্র ১ ঘন্টায় যাওয়ার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আমার এই রিভিউটি আপ্লোড করা হয়েছে journeykothabd.com ওয়েবসাইটে এবং এইটা লোকাল বাস জার্নি রিভিউ - ০২

ছবি কারিগর - আজহারুল ইসলাম

রিভিউ ক্যাটাগরি : লোকাল বাস ভ্রমণ
রিভিউ নাম্বার : ০২
লোকাল বাস কোম্পানীর নাম : গেইটলক বাস সাফা - মারওয়া ( এইগুলা বাসের কোন কোম্পানিগত নাম থাকে না, এইগুলা পাইভেট মালিকানাধীন বাস)
বাসের রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার : মনে নেই
লোকাল বাসের রুট : সিলেট - জাফলং / জাফলং - সিলেট
ভ্রমণের তারিখ : ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২

জাফলং থেকে সিলেট বাস জার্নি রিভিউ - ০২

আসসালামুয়ালাইকুম, আবারো ফিরে এলাম আরেকটা নতুন বাস জার্নি রিভিউ নিয়ে এবং আজকের বাস ভ্রমণ রিভিউটি হচ্ছে আমাদের ওয়েবসাইট journeykothabd.com এর জাফলং সিরিজের পর্ব - ২। আগের রিভিউ বা আর্টিকেলটাতে আমি সিলেট থেকে জাফলং এসি বাসে যাওয়ার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম। আপনারা যারে ওই রিভিউটা পড়েন নাই, তারা আগে ওই রিভিউটা পড়ে আসুন। [ সিলেট-জাফলং বাস জার্নি রিভিউ পড়তে এইখানে ক্লিক করুন ]। এই লিংক বা টাইটেলটাতে ক্লিক করে আগে ওই রিভিউটা পড়ে আসুন। তারপর এই রিভিউ পড়েন, তাহলে অনেক মজা পাবেন।


আজকের বাস ভ্রমণটি করেছিলাম জাফলং ট্যুরিস্ট স্পট থেকে আমার বাসা তথা সিলেটের শাহপরান গেইট এর উদ্দেশ্যে। আমার ট্যুরমেট হিসেবে ছিলো সাফা-মারওয়া নামক একটি লোকাল গেইটলক নন-এসি বাস। বলে রাখা ভালো, এই বাস কোম্পানিটির মাত্র এই একটা বাসই আছে। এবং এই বাস কোম্পানি গুলো নিজস্ব বা প্রাইভেট মালিকানাধীন। এই বাস ভ্রমনের ভিডিও অলরেডি আমি আমার ইউটিউব চ্যানেল তথা Azhar vai - Official এ আপলোড করে রেখেছি, এই আর্টিকেলটার নিচ অংশে আমার ইউটিউব ভিডিওটির লিংক দেয়া থাকবে।আপনারা চাইলে দেখে আসতে পারেন। যাই হোক, রিভিউওটা একটু বড় হতে পাতে, আশা করি যারা পুরো আর্টিকেলটা পড়বেন তারা অনেক কিছু জানতে পারবেন।

জাফলং থেকে কখন বাসটি ছেড়ে ছিলো?

যারা সিলেট-জাফলং ভ্রমনের রিভিউটা পড়ে ফেলেছেন, তারা এখন হয়তো জেনেই গেছেন যে, কেনো আমি মুলত আমার বড় ভাইয়ার সাথে জাফলং গিয়েছিলাম। যাই হোক আমরা পুরো দুপুর জাফলং এ ঘুরাঘুরি করি। বিকাল ৪ টা ১৫ মিনিটের সময় মুলত জাফলং এর পানির ওইখান থেকে আমরা উপরে উঠি - এই রিভিউটি আপ্লোড করা হয়েছে journeykothabd.com ওয়েবসাইটে - উঠার পর, পার্কিং প্লেসে অনেক গুলো রিজার্ভ বাস দেখতে পাই এবং ওই বাস গুলোর পাশেই একটা গেইটলক লোকাল বাস দাড়িয়ে ছিলো। ওই লোকাল বাসের হেল্পারই সবাইকে ডাকতেছিলো। আমি এবং আমার বড় ভাইয়া, ওইখানে যাওয়ার পর উনার সাথে কথা বলি এবং বাসের সামনের ২ টা সিটের টিকেট কেটে ফেলি। টিকেট কাটার পর বিকাল ৪ টা ২৫/৩০ মিনিটের সময় আমাদের বাস সিলেট শহরের উদ্দেশ্যে জাফলং থেকে রউনা করে।

বাসে উঠে কি কি করলাম ?

বাসে উঠার আগেও আমি কিছু ভিডিও রেকর্ড করে ফেলি আমার ইউটিউব চ্যানেলের ভ্রমন ভিডিও এর জন্য যা আপনাদেরকে একটু আগেই বলেছি । যাই হোক, আমি বাসে উঠে আমার সিটে বসে যাই এবং আমার ক্যামেরা কোথায় সেট-আপ করবো তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে যাই। অত:পর আমার বড় ভাইয়া আমাকে বলে, হাতে নিয়েই রেকর্ড করতে।- এই রিভিউটি আপ্লোড করা হয়েছে journeykothabd.com ওয়েবসাইটে - তাই বড় ভাইয়ার কথা মতো আমি ক্যামেরা সেট-আপ আমার হাতে নিয়েই ভিডিও রেকর্ড করা শুরু করে ফেলি। আর তারই মধ্যে আমার ভার্সিটির ফ্রেন্ড সুবির হটাত করে পিছন থেকে এসে আমার ঘাড়ে হাত রাখে এবং আমি চমকে উঠি, অত:পর ওর সাথে বাসের ভিতরেই কুশল বিনিময় করি। আচ্ছা যাই হোক, অনেক প্যাচাল পাড়লাম এখন আবারো আমি আমার রিভিউতে ফিরে আসি, এখন হয়তো সময়ের কিছুটা গরমিল হতে পারে। আপনারা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেইখেন।

রাস্তায় কি কি হলো?

আমাদের বাসও চলা শুরু করে ফেলে। আমাদের বাস ছাড়ার কিছুক্ষন পর আমরা তামাবিল জিরো পয়েন্টে চলে আসি। জিরো পয়েন্টে ৫-১০ মিনিটের মতো আমাদের বাসটা থেমে ছিলো। তারপর আবারো আমাদের বাস চলতে শুরু করে এবং আমাদের বাসের ড্রাইভার খুবই সুন্দর ভাবে ড্রাইভ করতেছিলেন এবং আমি তা অনেক উপভোগ করতেছিলাম। পাশাপাশি ভিডিও রেকর্ড করতেছিলাম। বাসের ড্রাইভার ভাইয়ের চেহারা আমার আপন চাচার মতো ছিলো। আমি পুরো অবাক হয়ে গেছিলাম দেখে। যাই হোক উনি যখন সিলেটি ভাষায় কথা বলা শুরু করলো তখন আমি বাস্তবে ফিরে আসি এবং এইটা ভুলে আমার জার্নিটা উপভোগ করতে থাকি।


বাস চলতে চলতে, আমরা এক এক করে কানাইঘাট, জৈন্তাপুর বাজার, হরিপুর বাজার ক্রস করতে থাকি এবং পাশাপাশি সুর্যস্তের সময় হতে থাকে। একটু একটু অন্ধকার নামতে থাকে। আমি আমার ভিডিও রেকর্ড করতে থাকি। অত:পর আমরা জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট এর পাশে চলে আসি এবং একটু যানজটের শিকার হই। যানজট শেষ হলে আমাদের বাস সিলেট শহরের উদ্দেশ্যে চলতে থাকে। আর আমি বাসের ড্রাইভের ভাইয়ের চালানো দেখতে থাকি এবং পুরো ভ্রমনটা উপভোগ করতে থাকি।


এইভাবে চলতে চলতে প্রায় বিকাল ৫ টা ৩৫ মিনিটের সময় আমরা আমাদের গন্তব্য তথা শাহপরান গেইটে এ এসে পৌছাই। তার পর আমি এবং আমার বড় ভাইয়া বাসের ড্রাইভার ভাই ও স্টাফদের থেকে বিদায় নিয়ে বাস থেকে নেমে যাই - এই রিভিউটি আপ্লোড করা হয়েছে journeykothabd.com ওয়েবসাইটে - যাই হোক এখন পুরো জার্নির ভালো দিক ও খারাপ দিক এবং কিছু জিনিসের উপর রেটিং দিয়ে আমার রিভিউটা শেষ করে ফেলি।

বাস জার্নির ভালো/খারাপ দিক ও সার্ভিস রেটিং :

বাস জার্নির ভালো দিক : এই বাস জার্নিটার ভালো দিক আমার কাছে দুইটা দিক লেগেছিলো। এক হচ্ছে নন এসি বাস হওয়া সত্ত্বেও বাসে একটাও লোকাল যাত্রী রাস্তা থেকে এক্সট্রা তুলে নাই, তাই অনেকে ভালোভাবে জার্নিটা করতে পারছি। অপরদিকে দুই নাম্বার হচ্ছে বাসের ড্রাইভার এবং স্টাফের ব্যাবহার। উনারা আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন ভিডিও রেকর্ড করার সময়।
বাস জার্নির খারাপ দিক : আলহামদুলিল্লাহ, লোকাল বাস হিসেবে খুবই ভালো সার্ভিস পেয়েছি, আমার চোখে তেমন কোন খারাপ দিক আসছে না। তবুও একটা জিনিস খারাপ ও বলবো না কিন্তু খারাপের আশেপাশে বলা যায়, সেটা হচ্ছে বাসের সিট ২টির মধ্যে গ্যাপ খুবই ছোট, লেগস্পেস নেই বললেই চলে। যাই হোক, লোকাল বাস থেকে এর থেকে আরো ভালো সিট আশা করাটাও কিন্তু বোকামি।
বাস জার্নির মোট সময় : আমি থাকি শাহপরান মাজারের পাশেই, সাধারণত আমার জাফলং থেকে শাহপরান গেইটে যেতে মোট সময় লাগে ১ ঘন্টা ১০/১৫ মিনিটের মতো। ওইদিন যেহেতু আমি শাহপরান মাজারের সামনে অর্থাৎ শাহপরান গেইটে এসে নেমেছিলাম, সেহেতু আমাদের জাফলং থেকে শাহপরান গেইটে যেতে সময় লেগেছিলো ১ ঘন্টা ০৫/১০ মিনিটের মতো। রাস্তায় কোন যানজট ছিলো না, আমরা ঠিক সময়েই জাফলং থেকে শাহপরান গেইটে আসি, সুতরাং বলাই যায় মোট বাস জার্নির সময় হচ্ছে ১ ঘন্টা ০৫/১০ মিনিট।
বাসের সার্ভিস রেটিং : গেইটলক বাস হিসেবে বাসের সার্ভিস অনেক বেশি ভালো ছিলো, জৈন্তা এক্সপ্রেস এসি বাসের মতো লোকাল প্যাসেঞ্জার তোলে নাই। একেবারে যাত্রীরা যেখানে নামতে চেয়েছেন সেই এলাকার আশেপাশের স্টপে নামিয়েছেন। রাস্তা থেকে কোন এক্সট্রা প্যাসেঞ্জার বাসে তুলেন নাই। আমি যদি সিলেট-জাফলং রুটের এসি বাসের সাথে তুলনা করি, তাহলে বলবো এসি বাসের তুলনায় এই নন-এসি লোকাল বাসে ভালো সার্ভিস পেয়েছি। তাই আমি এই বাসের সার্ভিসকে ৯/১০ রেটিং দিবো।
ড্রাইভার রেটিং : বাসের চ্যাসিসটি মুলত ট্রাক চেসিস, সেই অনুযায়ী ড্রাইভার অনেক ভালোই ড্রাইভ করেছে। উনার ড্রাইভিং এবং ব্যাবহারকে বিবেচনা করে আমি উনাকে ৯/১০ দিবো।

পুরো ভ্রমণের ভিডিও লিংক কিভাবে দেখবেন?

আমার ইউটিউব চ্যানেলে অলরেডি ভিডিও আপ্লোড করা আছে, আপনারা যারা ভিডিওটি দেখতে চান ,তারা নিচের বাটনটি তে ক্লিক করুন।

ভিডিও দেখতে উপরে ক্লিক করুন

পুরো রিভিউটা মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ, রিভিউটা কেমন লাগলো, কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না কিন্তু।

যেকোন প্রয়োজনে আমাকে মেইল করুন - ets2ridoy@gmail.com

Post a Comment

0 Comments