রিভিউ টপিক : আজকের ভ্রমণ গল্পতে আমি একটা সুন্দর বাস জার্নি সম্পর্কে কথা বলবো, আমি মুলত লন্ডন এক্সপ্রেস এসি স্লীপার বাস ভ্রমণ করে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম মাত্র ৭ ঘন্টায় যাওয়ার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আমার এই রিভিউটি আপ্লোড করা হয়েছে journeykothabd.com ওয়েবসাইটে এবং এইটা স্লীপার বাস জার্নি রিভিউ - ০১
ছবি কারিগর - তানভির ইয়াসির ও মহিউদ্দিন মানিক |
রিভিউ ক্যাটাগরি : স্লীপার বাস ভ্রমণ
রিভিউ নাম্বার : ০১
স্লীপার বাস কোম্পানীর নাম : লন্ডন এক্সপ্রেস
বাসের রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার : মনে নেই
বাসের রুট : ঢাকা - চট্টগ্রাম
ভ্রমণের তারিখ : ৮ জানুয়ারী ২০২৩
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম স্লীপার বাস জার্নি রিভিউ - ০১
আপনারা যারা আমার journeykothabd.com ওয়েবসাইট এর চেয়ার কোচ বাস সিরিজের দ্বিতীয় রিভিউ তথা " ইউনিক সার্ভিস বাস ভ্রমণ | মাত্র ৫ ঘন্টায় সিলেট থেকে ঢাকা যাওয়ার গল্প | ঢাকা - সিলেট বাস | বাস জার্নি রিভিউ - ০২ " পড়েছেন তাদের এই রিভিউটা পড়ে মজা লাগবে। আর যারা ওই রিভিউটা পড়েন নাই তারা উপরের ( " " ) এর ভিতরের টাইটেলটাতে ক্লিক করে আগের রিভিউটা পড়ে আসুন। তারপর আমার এই রিভিউটা পড়ুন। বলে রাখা ভালো, ওইদিন রাতে অনেক ক্লান্ত ছিলাম তাই আর আমি আমার ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ভিডিও রেকর্ড করতে পারি নাই। তাই লন্ডন এক্সপ্রেস স্লীপার বাস জার্নির কোন ভিডিও আমার ইউটিউব চ্যানেল, তথা Azhar Vai - Official এ পাবেন না। এইজন্য আমি অত্যন্ত দু:খ প্রকাশ করছি।
যাই হোক, আমি এবং আমার বন্ধু মনির ও শড়বিন্দু ৭ তারিখ রাতে সিলেট থেকে ঢাকা যাই। তারপর পুরো দিন ঢাকা শহর ঘুরে ঘুরে কিছু ট্যুরিস্ট স্পট ভিজিট করি এবং ঠিক সন্ধা হয়ে গেলে আমরা পুরান ঢাকাতে যাই - ওইখানে যেয়ে বিসমিল্লাহ কাবাব রেস্টুরেন্টের কাবাব, হাজী বিরিয়ানির খাসির তেহারি ও একটা চায়ের দোকানে যেয়ে মালাই চা, ঢাকাইয়া বাখরখানি এবং শেষমেশ আমরা বিউটি লাচ্চি হোটেলের লাচ্চি এবং ফালুদা খাই। অত:পর সন্ধ্যা ৮ টা ৪৫ মিনিটের সময় আমরা আরামবাগের উদ্দেশ্যে রওনা হই। অত:পর আরামবাগে লন্ডন এক্সপ্রেস এর বাস কাউন্টারে যাই।
আমাদের প্লেন ছিলো এর পরের দিন আমরা চট্টগ্রামের কিছু ট্যুরিস্ট প্লেস এক্সপ্লোর করবো, তাই আমরা একটা আরামদায়ক বাস ভ্রমণ করার জন্য চিন্তা করি, কারন সবাই অনেক বেশি ক্লান্ত ছিলাম। তাই লন্ডন এক্সপ্রেস এর কাউন্টারে যেয়ে আমরা মুলত টিকেট কাটার জন্য কাউন্টার ম্যানেজার এর সাথে কথা বলি। এবং কাউন্টার ম্যানেজার ভাইয়া আমাদেরকে জানায়, রাত ১২ টা এর আশেপাশে সময়ে স্লীপার বাস আছে, ঢাকা - চট্টগ্রাম এই রুটে। ( সময়টা ঠিক মনে করতে পারতেছি না, তাই আমি অত্যন্ত দু:খিত)
বাস কখন ছেড়েছিলো??
অত:পর আমরা সেই স্লীপার বাসের টিকেট কেটে ফেলি এবং আরামবাগে অবস্থিত নটরডেম কলেজের আশেপাশে কিচ্ছুক্ষন ঘুরাঘুরি করি। তারপর শাপলা চত্তরের এইদিকে ঘুরাঘুরি করি এবং ছবি তুলি। অত:পর আমরা প্রায় রাত ১১ টা ৩৫ মিনিট এর সময় কাউন্টারে চলে আসি এবং আমাদের বাসের জন্য অপেক্ষা করতে থাকি।
কিচ্ছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর আমাদের কাউন্টার ম্যানেজার আমরা যারা যাত্রী ছিলাম আমাদের সবাই ডেকে বাসে উঠার কথা বলেন। আমি, আমার বন্ধু শড়বিন্দু ও মনির আমরা ৩ জন মাঝামাঝি জায়গার ৩ টা সিট বুক করেছিলাম। আমি আমার বাম পাশের আলাদা একটা স্লীপার সিট নিয়েছিলাম। আমরা বাসে উঠে নিজ নিজ যায়গায় যেয়ে বসে পড়ি, বাস ছাড়ার পর প্রচুর ক্লান্ত ছিলাম তাই শুয়ে পড়ি।
বাসে উঠে কি কি করলাম ?
যাই হোক, আমাদের বাস ঠিক সময়েই আরামবাগ থেকে আমাদের গন্তব্য চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এরই মধ্যে বাকি কাউন্টার গুলো থেকেও প্যাসেঞ্জার নেয়া শুরু করে এবং প্যাসেঞ্জার নেয়ার পর আমরা ঢাকা ত্যাগ করি। চোখে অনেক ঘুম ছিলো, তাই ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম।
হটাত সুপারভাইজার ভাইয়ের ডাকে ঘুম ভেঙে যায় এবং বলে রাখা ভালো বাসের টিকেট কিন্তু আমার কাছে ছিলো না - টিকেট ছিলো শড়বিন্দুর কাছে। তাই আমি সুপারভাইজার ভাইকে তা বলি এবং সুপারভাইজার ভাই আমাকে সরি বলে শড়বিন্দুর থেকে নিয়ে আমাদের সেই টিকেট চেক করেন। - এই রিভিউটি আপ্লোড করা হয়েছে journeykothabd.com ওয়েবসাইটে - অতপর আমি আবারো ঘুমিয়ে যাই।
আমার ঘুম ভাঙে কুমিল্লার একটা রেস্টুরেন্টে হোটেল বিরতিতে, কখন এবং কিভাবে কুমিল্লাতে আসলাম তা আমি নিজেও জানি না। অত:পর আমি এবং শড়বিন্দু বাস থেকে নেমে নাস্তা কিনি এবং খাই। মনির বাস থেকে নামে নাই, তাই ওর জন্য এক কাপ কফি নিয়ে আবারো আমরা বাসে উঠে যাই।
রাস্তায় কি কি হলো?
হোটেল বিরতির পর, আমাদের বাস আবারো চিটাগাং এর উদ্দেশ্যে চলা শুরু করে এবং আমি আবারো ঘুমিয়ে যাই। বলে রাখা ভালো আমাদের বাসটি ছিলো ঢাকা-কক্সবাজার রুটের এবং আমরা ভ্রমণ করেছিলাম ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত। অত:পর আবারো আমার ঘুম ভেঙে যায় সুপারভাইজার ভাইয়ের ডাকে এবং ঘুম থেকে উঠে দেখি ঘড়িতে সকাল ৭ টা ৫/১০ বাজতেছিলো।
আমরা অলরেডি দামপাড়া বাস কাউন্টারের সামনে চলে আসছি - এই রিভিউটি আপ্লোড করা হয়েছে journeykothabd.com ওয়েবসাইটে - তারপর আমি এবং আমার বন্ধু মনির ও শড়বিন্দু বাসের ড্রাইভার ভাই ও স্টাফদের থেকে বিদায় নিয়ে বাস থেকে নেমে যাই। যাই হোক এখন পুরো জার্নির ভালো দিক ও খারাপ দিক এবং কিছু জিনিসের উপর রেটিং দিয়ে আমার রিভিউটা শেষ করে ফেলি।
বাস জার্নির ভালো/খারাপ দিক ও সার্ভিস রেটিং :
বাস জার্নির ভালো দিক : বাসটি স্লীপার ছিলো, তাই বাসের কম্ফোর্ট নিয়ে কোন কম্প্রোমাইজ লন্ডন এক্সপ্রেস এর ম্যানেজমেন্ট করে নাই। সিট অনেক আরামদায়ক মনে হয়েছে আমার কাছে এবং বাসের ভাড়া অনুযায়ী বাসের ভিতর এবং বাহিরের ডেকোরেশন খুবই সুন্দর ছিলো। তাই বাসের সিট এর দিকটাই আমার কাছে সব থেকে বেশি ভালো লেগেছিলো।
বাস জার্নির খারাপ দিক : লন্ডন এক্সপ্রেস স্লীপার কোচ বাসটির খারাপ দিক বলতে একটা দিকই বলবো, তা হচ্ছে বাসটির চেসিস ছিলো Ashok Layland অর্থাৎ ইন্ডিয়ান কম দামের চেসিস, তাই লন্ডন এক্সপ্রেস কোম্পানির Man বাসের তুলনায় সাসপেনশন, ইঞ্জিন নয়েজ অনেক বেশি ছিলো এই স্লীপার বাসটিতে। এবং এটাই আমার কাছে কিছুটা খারাপ লেগেছিলো।
বাস জার্নির মোট সময় : আমাদের বাস আরামবাগ লন্ডন এক্সপ্রেস এর কাউন্টারের সামনে থেকে ছেড়ে ছিলো প্রায় রাত ১২ টার আশেপাশের সময়ে এবং আমরা চিটাগং দামপাড়া যেয়ে পৌছাই সকাল ৭ টার আশেপাশে। অন্যদিকে হোটেল ব্রেক ছিলো প্রায় ৩০ মিনিটের মতো। সুতরাং বলা যায়, আমরা মোট প্রায় ৬ ঘন্টা ৩০ মিনিটের সময় ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পৌছাই।
বাসের সার্ভিস রেটিং : বাসের বাহ্যিক - ভিতরের ডেকোরেশন এবং স্টাফদের ব্যবহার এর উপর পর্যবেক্ষণ করে আমি বাসের সার্ভিসকে ৯/১০ দিবো।
ড্রাইভার রেটিং : ড্রাইভার আংকেল অনেক সুন্দর ভাবেই বাস চালিয়েছেন, যেই স্থানে যেভাবে চালানো উচিত, সেভাবেই উনি চালিয়েছেন। তাই আমি ব্যাক্তিগত মতামত এর ভিত্তিতে উনাকে দিবো ৯/১০।
পুরো রিভিউটা মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ, রিভিউটা কেমন লাগলো, কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না কিন্তু।
যেকোন প্রয়োজনে আমাকে মেইল করুন - ets2ridoy@gmail.com
0 Comments