রিভিউ টপিক : আজকের ভ্রমণ গল্পতে আমি মুলত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাস রুটে এস আই এন্টারপ্রাইজ নন - এসি বাস ভ্রমণ করে কক্সবাজার থেকে পঞ্চগড় যাওয়ার জার্নি অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আমার এই রিভিউটি আপ্লোড করা হয়েছে journykothabd.com ওয়েবসাইটে এবং এইটা বাস জার্নি রিভিউ - ১২
ছবি কারিগর -এস আই এন্টারপ্রাইজ ফেইসবুক পেইজ |
রিভিউ ক্যাটাগরি : বাস ভ্রমণ
রিভিউ নাম্বার : ১২
বাস কোম্পানীর নাম : এস আই এন্টারপ্রাইজ
বাসের রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার : ঢাকা মেট্রো ব ১৫-৭০৪০
ড্রাইভার : হানিফ ভাই
কক্সবাজার - পঞ্চগড় বাস জার্নি রিভিউ - ১২
টেকনাফ থেকে সকালে রওনা দিয়ে দুপুর ১.৩০ এর দিকে এসআই এর মূল কাউন্টার সুগন্ধা বীচের সামনে শামীম গেষ্ট হাউসের নিচে আসি।
চট জলদি ফ্রেস হয়ে দুপুরের খাবার কোনো রকম খেয়ে কাউন্টার এ এসে টিকিট নেই দুপুর ২ টার দিকে। এক্ষেত্রে এস আই এন্টারপ্রাইজ এর কক্সবাজার সেক্টরের দ্বায়িত্বে থাকা জিএম অনেক হেল্পফুল ছিলো। এবং কাউন্টার স্টাফরাও অনেক আন্তরিক ছিলো।
২.১৫ মিনিটে কোস্টার বাস চলে আসে। আমরা ৭/৮ জন যাত্রী সেখান থেকে ডলফিন মোরে চলে আসি প্রধান বাসের কাছে।
বিশাল পথ পারি দেওয়ার বাহন |
ছোট্ট বাস থেকে বড় বাসে উঠার সময়, ডলফিন মোর |
অনেকের ভাবতেই ভয় চলে আসে পথের পরিমাণ দেখে! |
সবার ব্যাগ পত্র উঠানোর পর কাউন্টার স্টাফ গাড়ির গাইডকে সকল যাত্রী কে কোথায় থেকে উঠবে তার লিস্ট ধরিয়ে দিলো নাম্বার সহ।
১০ এর ৭ পাওয়ার যোগ্য আমার মতে। |
রুটের মত টিকিট টাও বিশাল |
বিদায় কক্সবাজার! |
গাড়ি দুপুর ২.৩২ মিনিটে ডলফিন মোর থেকে ছাড়ে।
তখন শুনতে পারি আজকে গাড়ি কক্সবাজার পৌঁছাইছে দুপুর ১.৩০ এ।
একই ড্রাইভার, সুপারভাইজার & হেল্পার নিয়ে গাড়ি ছাড়লো।
চিন্তায় পড়ে গেলাম সারা রাত & সারা দুপুর গাড়ি চালায় আবার চলে যাচ্ছে সেই ড্রাইভারই।
আসলেই পরিবহন সেক্টরে ইনকাম করা কতটা কষ্টের।
কক্সবাজার টার্মিনাল, লিংক রোড, রামু থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম অবদি অনেক যায়গা থেকে যাত্রী উঠলো।
কোথাও ১ জন, কোথাও ২ জন।সবাই টিকিটের যাত্রী। অনলাইনে কল করে প্রেমেন্ট দিয়ে সিট কনফার্ম করছে।
এবং গাড়িতে উঠার পর সুপারভাইজার সাহেব তাদের টিকিট গুলো দিয়ে দিচ্ছে।
রামু পার হয়ে মোটে ১০/১৫ কিলো পার হইছি তাতেই শুরু হইলো বৃষ্টি!
ধীরে ধীরে রাস্তা যত এগুতে থাকলো বৃষ্টি তত বাড়তে থাকলো।
হোটেল ব্রেক দিলো টাইম পার্ক রেস্টুরেন্টে।
টাইম পার্ক, সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম। |
ততক্ষণে বিকাল গড়িয়ে সন্ধা।
ঝুম ঝুম বৃষ্টি, কখন ও বেশি, কখন ও কম।
তার চেয়ে বড় কথা মাত্রা অতিরিক্ত ট্রাফিক।
এর চেয়েও বড় কলিজা হচ্ছে চট্টগ্রাম - কক্সবাজার রুটের সিএনজি/ অটো রিকশার ড্রাইভারদের।
একটা বিপরীত মুখী গাড়ি ৪০/৫০/৬০ স্পিডে ওদের সামনে চলে আসলেও ওদের সাইটে চাপার রাস্তা থাকলেও ওরা চাপবে না। বাধ্য হয়ে বাস ড্রাইভারকে বাস স্লো করে তারপর বাসকেই চেপে যেতে হয়।
যা মোটামুটি সবাই জানে যারা এই রুটে চলাচল করে।
পুরো রাস্তায় ড্রাইভার সাহেব কোনো পারাপারি, রাফ ড্রাইভার করেনি চট্টগ্রাম অবদি।
বোঝাই যাচ্ছিলো গত রাতের ড্রাইভিং এর ক্লান্তিটা দূর করার চেষ্টায় আছে।
সন্ধায় প্রতিটা বাজারের জ্যাম ঠেলে ঠেলে চট্টগ্রাম একে খান যখন পৌঁছাই তখন ঘড়ির কাটা রাত ৮.৫০ টা বরাবর।
চট্টগ্রাম একে খান, বৃষ্টির মূহুর্তে। |
কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম আসতেই ৬ ঘন্টা ২০+ মিনিট শেষ।
যদিও এই রকম খুচরা যাত্রীর মত একজন এক এক যায়গা থেকে উঠাতে সময় অনেকটা লস হয়। কিন্তু যাত্রীর সুবিধার্থে কিছুই করার নেই।
৫ মিনিট রেস্ট নিয়ে গাড়িতে শেষ কজন যাত্রী নিয়ে মোট ২৮ জন বুকিং নিয়ে চট্টগ্রাম ছাড়লাম রাত ৯ টায়।
আর হ্যা পুরো রাস্তায় ইচ্ছে করেই বিপরীত পাশের গাড়ির সংখ্যা খেয়াল করতেছিলাম।
২ টা ৩ টা করে মার্সা যায় তারপর একটা পূরবী, একটা সৌদিয়া এরো, একটা সৌদিয়া যাচ্ছে।
বোঝাই যাচ্ছে এখন ও শক্ত অবস্থায় আছে মার্সা।
একদিকে ভাল ভাল অপারেটর চলে আসায় সুন্দর সার্ভিস পাচ্ছে। কিন্তু অন্য দিকে কক্সবাজার পর্যটন শিল্পের সবচেয়ে বড় বাধা বর্তমান এই চিকন রাস্তা।
জানি না কবে নাগাদ ৬ লেনে রুপান্তর করবে এই রাস্তা।
যাই হোক!
চলে আসি আমাদের ট্যুরে,
চট্টগ্রাম যে পৌছাইছি বৃষ্টি কিন্তু থামেনি। চলছে তো চলছেই অবিরাম।
সিটিগেট পার হয়ে ড্রাইভার সাহেব এবার একটু টান ধরলেন।
৩০/৪০ এর গতি ছেড়ে ৫০/৬০ ধরে যাচ্ছে বৃষ্টিতে।
সীতাকুণ্ড পার হলাম বৃষ্টি কমার কোনো নাম গন্ধ নেই।
ফেনী পার হওয়ার পর কিছুটা কমতে থাকে। একটা সময় রাস্তা শুকনো পাওয়া যায়।
তারপর ড্রাইভার সাহেব একটা ভাল রকমের টান ধরলেন।
প্রায় ৩ ঘন্টা লস টাইম পুরোনের বৃথা চেষ্টা আর কি!
এর মাঝে চট্টগ্রাম - সিলেট গামী একটা অশোক ল্যাল্যান্ড গাড়ি( নাম টা মনে পড়তেছে না) প্রচুর রাফ চালায় চাপাচাপি করতে করতে যাচ্ছিলো।
তখনই হানিফ ভাই যার দক্ষতার পরিচয় দিলেন।
সুন্দর ভাবে ফাঁকা রাস্তায় পাশ কাটিয়ে চলে আসলো।
রাত ১১.২৮ নাগাদ বাস চলে আসলো অফ বিট রিসোর্টে।
অফ বিট রিসোর্ট, চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা। |
চট্টগ্রাম থেকে বৃষ্টির কারণে অফ বিট( চৌদ্দগ্রাম) অবদি আসতে ২ ঘন্টা ৩০ মিনিটের মত সময় লাগছে।
ঠিক রাত ১২ টায় বাহির হয়ে আর বিন্দুপরিমানের সময় নষ্ট না করে গাড়ি ৯০/১০০ গতি ধরে টানতে থাকে।
এই সময় সুপারভাইজার পিছনে রেস্টে চলে যায়।
হেল্পার তার সিটে দ্বায়িত্ব পালন করতেছিলো।
ড্রাইভার সাহেবে সুন্দর গতিময় ড্রাইভিং সামনের সিটের কয়েকজন সহ B, C, D রো এর যাত্রীরাও মাথা তুলে উপভোগ করতেছিলো।
অনেকে এসআই এর এই লং রুটের বাসে না কি ১২০/১৩০/১৩৭ অবদি গতি পাইছে।
কিন্তু আমি পুরো রাস্তা গাড়ির স্পিড মিটার & মোবাইলের স্পিড মিটার চেক করছি।
পুরো রাস্তায় সর্বোচ্চ পাইছিলাম ১০৮ এর মত।
যা অফ রেকর্ড। অন রেকর্ড অবদি ১০৪ আছে ফোনে।
এই গতিটা কিন্তু অনেক! এবং ১০০ ছুঁইতে এবং ধরে রাখতে পারছে দুই ড্রাইভার মিলে মাত্র ৩/৪ বারের মত।
বাকিটা সময় ৭০/৮০/৯০ করে চলছে।
৯০+ এও খুব কম সময়ই গাড়ি গেছে।
গতি নিয়ে কোনো কালেও মাথা ব্যাথা না থাকলেও এখানে বলার অর্থ হচ্ছে অযথা হয়তো বলে যে ওমুক গাড়ি ১২০/১৩০/১৩৫+ এ চলে।
এত গতিতে চলার মত রাস্তা এক্সপ্রেস ওয়ে ছাড়া সত্যি বলতে নেই আর কোনো রাস্তা বাংলাদেশে।
হয়তো কম সময়ই অনেকে পায়।
যাই হোক যত গতি তত ক্ষতি।
কারণ যত গতি বাড়বে ড্রাইভারের হাত থেকে গাড়ি কন্ট্রোলের ক্ষমতা তত কমবে।
দাউদকান্দি চলে আসার পর টাঙ্গাইল- কক্সবাজার রুটে চলা দুই সোনিয়ার দেখা।
তারা বামপারে বামপারে অনেক রাফ ড্রাইভিং করে যাচ্ছিলো।
এক গ্যাপে পড়ে পিছনের গাড়িটা আমাদের পিছনে পড়ে যায় মেঘনার টোলের আগে।
মেঘনার টোলের পর বাজে ভাবে চাপ দিয়ে চলে যায়।
এই দিকে দেখি আমাদের হেল্পার সাহেব ঘুম।
সামনের ২/৩ জন যাত্রী আর আমি জেগে আছি শুধু।
গিয়ে ইঞ্জিন কাভারে বসে ড্রাইভারকে ঠান্ডা করলাম।
অযথা কেউ খোঁচা মারলে তাদের লগে লাগতে নাই।
তারা তাদের মত সামনে আগায় গেলো।
আমরা আমাদের মত যাচ্ছিলাম।
সাইনবোর্ডে এসে সামনে দেখি দুই সোনিয়া & ইকোনো কঠিন পারাপারি করতেছে।
মনে হচ্ছে ৩ ট্যুরের বাস পারাপারিতে মগ্ন।
আমাদের গাড়ি ও তখন ১০০ ছুঁই ছুঁই। রাস্তা পুরো ফাঁকা।
রাত তখন দুটা বাজে প্রায়।
ড্রাইভার সাহেব এক সাইট দিয়ে সুন্দর করে ওদের পাশ কাটিয়ে মেয়র হানিফ ফ্লাই ওভারে উঠে যায়।
টোল দিয়ে কমলাপুর হয়ে, আরামবাগ দিয়ে পুরোনো পল্টন দিয়ে হেল্পারের কল শুনতে শুনতে গাড়ি আবার রাজারবাগ চলে গেছিলো।
পরে হানিফ ভাই হেল্পারকে রাগ হয়ে বলতেছে রাস্তা চিনবি না আমারে বলতি, এক রাস্তা এভাবে ঘুড়ালি কেন!
পরে মগবাজার হয়ে এফডিসি দিয়ে পান্থপথ হয়ে ধানমন্ডি দিয়ে গাবতলি চলে আসি। রাত তখন ২.৩০+ বেজে গেছে।
গাবতলি চেকিং শেষে ফাঁকা রাস্তায় আবার কঠিন টান ধরলো ড্রাইভার সাহেব।
গতি কিন্তু ১০০ এর নিচে।
কিন্তু এর মাঝেও কোথাও ব্রেক হলে বা স্লো হলেই তারাতারি আগের গতিতে ফিরে যাচ্ছে।
এতে করে আমাদের পুরো জার্নিটার লস হওয়া সময় টা অনেক টা পুষিয়ে ফেলছে।
রাত ৩.৩০ নাগাদ টাঙ্গাইল মির্জাপুরে তৈল নেওয়ার এবং চা এর বিরতি দেয়।
তার আগেও হেল্পার সাহেব ক্লান্তিতে ঝিমায় পড়ছিলো।
আসলেই এতটা পথ একা ডিউটি করা অনেক তাফ।
যখন সব যাত্রী ঘুম। ড্রাইভার সাহেব ও আগের রাত টানা ড্রাইভিং করে সারা দিন ড্রাইভিং করে ক্লান্ত। গিয়ে বসলাম বনেটে।
সেখানে হালকা টুকটাক গল্প করে করে পাম্প পর্যন্ত চলে আসছি।
সেখানে এসে দেখা নওগাঁ - সিলেটের অশোক ল্যাল্যান্ড এস আই।
১০ মিনিটের মত বিরতি দিয়ে দুই গাড়ি একই সাথে বাহির হয়ে কয়েক সেকেন্ডের মাঝে সিলেটের জনকে পিছনে ফেলে সামনে আগাতে থাকি।
রাত ৪.৩৫ নাগাদ যমুনায় টোল দিয়ে সোজা সিরাজগঞ্জ শহরে চেকিং এর বিরতি দেই ৪.৫০ নাগাদ।
প্রতিটা ব্রেকেই কিছু যাত্রী ওয়াশরুমের নামে নেমে যাচ্ছিলো।
ওনাদের খুঁজে আনতে আবার সময় লস।
সেখানে চেকিং এবং যাত্রী সব বুঝে নিয়ে সিরাজগঞ্জ শহর হয়ে নকলা ব্রিজ দিয়ে সোজা টান। ৫.০২/৩ এর দিকে সিরাজগঞ্জ থেকে টান দিয়ে হানিফ ফুড ভিলেজ দাথিয়াদিগর, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জের পৌঁছাই ৫.৩৬ মিনিটে।
হানিফ ফুড ভিলেজ, সিরাজগঞ্জ। |
কতটা প্রেশারে হানিফ ভাই নিয়ে আসছে শুধু তার ড্রাইভিং এর দিকেই তাকায় ছিলাম।।
হোটেলে খানা দানা শেষ করে হোটেল থেকে বাহির হই ৬.০৫ এর দিকে।ততক্ষণে ফুড ভিলেজ, প্যান্টাগন & চান্দাইকোনার জ্যাম বড় হওয়া শেষ।
জ্যাম ঠেলে ঠেলে ফুড ভিলেজ পার হই ৬.২৫/৩০ নাগাদ। তারপর আর কোথাও দেখাদেখি নাই।
উনিও অনেক প্রেশার নিয়ে টেনে যাচ্ছে।
সময় টা কাভার করা এবং সময়ের একটু আগে প্রবেশ করে গাড়ির টুকিটাকি কাজ করানোর জন্য আর কি!
বগুড়া শেরপুর থেকে ২ যাত্রীর দই নিয়ে আবার টান। বগুড়া বাইপাস হয়ে গোবিন্দগঞ্জ চলে আসছি কম সময়েই।
ততক্ষণ ভালভাবে সকাল হয়ে গেছে। রাস্তায় রিক্সা/ ভ্যান চলে আসা শেষ।
কক্সবাজার রুট & এই নর্থের ভ্যান রিক্সাদের মাঝে আকাশ পাতাল তফাৎ। ওরা যেমন ঘাড় ত্যারার মত রাস্তায় চিপকায় থাকে নর্থে এরা গাড়ির হর্ণ শুনলে বা দেখলেই রাস্তা ছেড়ে দেয়।
বগুড়ায় আমার পাশের যাত্রী নেমে গেলে আমি দুই সিটে আরাম করে একটু রেস্ট নিচ্ছিলাম।
এতটা সময় এই সিটে বসে থাকতে থাকতে কোমরে ব্যাথা ধরে গেছে। রাতটা ভাল ভাল কাটলেও দিনের বেলা কাটতেই চায় না সময়।
বিরক্তিকর রাস্তার এই রিক্সা, ভ্যান, অটো, সিএনজি।
সকাল ৯ টা ২০ এর দিকে রংপুর মর্ডানে পৌঁছাই।
রংপুর মর্ডান প্রবেশের মূহুর্তে। |
সেখানে যাত্রী নেমে যাওয়ার পর আবার টান শুরু।
সৈয়দপুর যেতে যেতে ১০ টা পার।
সৈয়দপুর বাইপাস হয়ে দিনাজপুর দশমাইল যখন পৌঁছাই তখন সকাল ১০.৫০ বেজে গেছে।
হালকা চা, পানি পান করে আবার টান শুরু।
চা বিরতি, দশমাইল, দিনাজপুর। |
একে একে বীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও হয়ে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে পঞ্চগড় যখন ঢুকি তখন বেলা ১২.১৭ মিনিট বেজে গেছে।
ঠাকুরগাঁও থেকে বাকিটা পথ অনেক বেশি প্রেশারে টেনে আসছে। রাস্তা মোটামুটি ভাল & ফাঁকা থাকায় বেশিভাগ সময় ৯০+ এ ছিলো গাড়ি।
এই রুটেই ২ বার ১০৪ পাইছি স্পিড। এতটুকুই।
স্টাফদের বিদায় দিয়ে নেমে পড়ি। ওরা গাড়ি নিয়ে আরো একটু সামনে চলে যায় গাড়ির কাজ করানোর জন্য।
পঞ্চগড় এ এসে বিদায়। |
ট্রিপের বাকি মাত্র ২ ঘন্টা।
আর স্টাফদের কথা মতে আজকে না কি অনেক টা জলদি চলে আসছে গাড়ি।
যাই হোক এবার আসি সারাংশেঃ-
নেগেটিভ পার্ট গুলো দিয়েই শুরু করি!
সার্ভিসের দিকে যদি বলি গাড়ি মেইনটেন্স এর সময় খুব কমই পায়।
যার দরুন একটা গ্লাস ভাঙা থাকলেও তা কক্সবাজার ঠিক করার সময় হয়নি। আরো বেশি ভাগ গ্লাসের রাবার গুলো লুজ হয়ে গেছে। এতে করে গাড়ি ৬০/৭০ পার হলে প্রচুর আওয়াজ হচ্ছিলো। সিট গুলো এত লং রুট হিসাবে আরো একটু বড় & স্মুথ হওয়ার প্রয়োজন ছিলো। সিট গুলো স্বাস্থ্যবাদ মানুষের জন্য অনেকটা ছোট্টই বটে। কিছু যাত্রী গাড়িতে উঠেই সিটে বসে বলতেছিলো সিট গুলো কেমন যেনো একটু ছোট্টো। হেল্পারের ব্যাবহার কিছুটা রুট ছিলো। আর এই রুটের যাত্রীদের বড় একটা অংশ সেনাবাহিনী & বিজিবিতে জব করে। রতিটা ট্রিপেই কয়েকজন করে থাকেই। আর যাত্রীরাও অনেকটা পথ ধৈর্য নিয়ে থাকে।তাই দুপক্ষেরই উচিত নরম থাকা।
আর একটা ছোট্টো বিষয়,
বলতে চাইনি তবে বলা উচিত বলে মনে করতেছি। গত দুবার আমি এস আই এ যাত্রা করছি।
চট্টগ্রাম - ঢাকা ( দিনাজপুরের টায়)
চট্টগ্রাম - রংপুর ( সিরাজগঞ্জের টায়)
পুরো রাস্তায় তাদের একটা লোকাল যাত্রী উঠাতে দেখিনি। কিন্তু ইদানীং শুনতেছি স্টাফ পরিবর্তনের সাথে সাথে এত চেকিং এর মাঝেও লোকাল যাত্রী নিচ্ছে। মালিক পক্ষের উচিত এই বিষয়ে নজর দেওয়া।
রানিং এ ২/১ টা মানা যায়। কিন্তু গাড়ি থামিয়ে দরদাম করে, গাড়িতে যাত্রী তুলে ভাড়া নিয়ে কেচাল বিষয় গুলো অদক্ষ স্টাফের পরিচয়।
যদি পোক টেনেই যেতে হয় তবে হানিফের লং রুটের স্টাফের থেকে টেনিং নিলে ভাল হবে।
যাই হোক তাদের ও অতিরিক্ত ইনকামের প্রয়োজন আছে। মালিক পক্ষ তাদের বেতন বাড়িয়ে কিংবা স্টাফ পরিবর্তন করে বিষয় গুলো মনিটরিং করা জরুরি।
যেহেতু সব কয়টা চেকিং অনেক শক্তভাবেই করতে দেখছি।
ভাল দিকঃ-
স্টাফ হেল্প ফুল ছিলো। ড্রাইভার সাহেব অনেক দক্ষতার সাথে গাড়ি পুরোটা পথ টেনে আসছে। এখন ও বলা চলে লং রুটে এসআই বেষ্ট অপশন।
সময় মেইনটেইন, সার্ভিস, সকল দিক দিয়ে।
আর ড্রাইভারের রেস্টের বিষয়টা আমার মনে হয় ঢাকায় ড্রাইভার চেঞ্জ করলে সবচেয়ে ভাল হয়।
এতে করে দুই ড্রাইভার সমান রেস্ট পেতো।
যদিও বা কক্সবাজার - সিরাজগঞ্জ আপ-ডাউন এর পর এক ড্রাইভার চেঞ্জ হয় এক ট্রিপের জন্য।
যাই হোক লং রুটের এই আই এর গল্প শেষ করি। ইনশাআল্লাহ আবার কোনো এক সময় ঢাকা-পঞ্চগড়-কক্সবাজার- পঞ্চগড়-ঢাকা ট্রিপ দিব।
পুরো রিভিউটা মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ, রিভিউটা কেমন লাগলো, কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না কিন্তু।
বাস যাত্রী / রিভিউ লেখকের নাম : Samsul Islam Sohag , আমাকে ফলো করতে আমার নামের উপর ক্লিক করুন এবং ফেইসবুকে যেয়ে ফলো করে দিন।
রিভিউটি কালেক্ট করা হয়েছে : ফেইসবুক ভিত্তিক গ্রুপ Bus Lover থেকে।
যেকোন প্রয়োজনে আমাকে মেইল করুন - ets2ridoy@gmail.com
0 Comments