রিভিউ টপিক : আজকের ভ্রমণ গল্পতে আমি মুলত বিনিময় পরিবহন (এসি সেগমেন্ট) বাস ভ্রমণ করে ঢাকা থেকে টাংগাইল যাওয়ার জার্নি অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আমার এই রিভিউটি আপ্লোড করা হয়েছে journeykothabd.com ওয়েবসাইটে এবং এইটা বাস জার্নি রিভিউ - ২৪
ছবি কারিগর -তাসনিম আলম নাবিল |
রিভিউ ক্যাটাগরি : বাস ভ্রমণ
রিভিউ নাম্বার : ২৪
বাস কোম্পানীর নাম : বিনিময় পরিবহন (এসি সেগমেন্ট
বাসের রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার : ঢাকা মেট্রো ব ১৫-৯৭৭৭
বাস রুট : ঢাকা - টাংগাইল
ভাড়া : ৬৫০ করে (যাওয়া এবং আসাতে মোট ২৬০০ টাকা লেগেছে ২জনের)
ভ্রমণের তারিখ : ২৩/০৩/২০২৩
ঢাকা - টাংগাইল বাস জার্নি রিভিউ - ২৪
আমি আর Rafiul Ramim অনেকদিন ধরেই ভাবছিলাম ধনবাড়ি ঘুরে আসবো প্যাকেট ১জে এসিতে। এর আগেও ৯৭৭৭ এ বেশ কয়েকবার ভ্রমণ করেছি কিন্তু একদম পিছনে সিট থাকা, ভিডিও করতে না পারা সহ আরও নানান জটিলতায় মনমতো টুর দিতে পারিনি মনমতো। আমরা আরও ১ সপ্তাহে আগে টিকেট কেটেছি এ লাইনে সিট পাওয়ার জন্য কেননা এই রুটের এসি বাসে প্রচুর যাত্রি চাপ।আমরা বেশ চিন্তিত ছিলাম কেননা প্যাকেট এর বদলে ১৪ সিরিয়ালের এসি ও পড়তে পারতো! কিন্তু ভাগ্য এতোই ভালো ছিলো যে আসার সময় ও ৯৭৭৭ পাই।
ড্যাশবোর্ড |
চারপাশে ধানক্ষেত ও মাঝখানে রাস্তা |
বাসের ওয়াইফাইতে স্মার্ট টিভিতে ইউটিউব চালানো হচ্ছে |
ফ্রন্ট ভিউ |
সিট যথেষ্ট আরামদায়ক |
সিম্পলের ভিতর গর্জিয়াস |
২৩ তারিখ সকাল ৮ টার আগে চলে যাই কল্যাণপুর। গাড়ি ছাড়ার সময় ছিলো ৮ টা ৩০ মিনিট। বাসে ফ্রি ওয়াইফাই এর ব্যাবস্থা ছিলো! ইন্টারনেট স্পিড ও বেশ ভালো ছিলো। জাস্ট টাইমে গাড়ি ছেড়ে দেয়। মোটামোটি ৭০-৮০ স্পিডে ধরে সাভার পৌছায়।সেখানে শ্যামলীর বাম্পারে চলতে চলতে নবিনগর এর আগেই শ্যামলী সহ আরো কিছু লোকাল বাস পাশ কাটিয়ে বাইপাইল পার হই।এরপরেই আরিফ আংকেল রাস্তা ফাকা পেয়ে ১০০ তুলে ফেলেন। এর মাঝে একটি রিকশার জন্য আমরা খুব বাজে ভাবে চাপ খাই। চন্দ্রা থেকে এস আই এর বাম্পার ধরে ব্রিজ পার করেই এস আই ওটি খায়। এরপর আরও বেশ কিছু বাস ওভারটেক করে ড্রাইভার আংকেল ১০০-১১০+ ধরে টানতে থাকেন। এরপরে জেনিনের ইসুজু এমটি ওভারটেক করি। ১০০+ থাকা অবস্থায় জেনিনের ইসুজু এমটি শাই করে ওভারটেক করে।
এরপর জেনিনের বাম্পারে দৌড়াতে দৌড়াতে আমরা পাবনার সরকার ট্রাভেলস কে ওভারটেক করি। এর মাঝে জামালপুরের রাজিব ওটি দেই আমরা।জেনিনের সামনে হুট করে ফাইভ স্টার এর ইসুজু এমটি হাজির হয়! দুই ইসুজু এমটি পারাপারি দেখে আমরা বেশ মজা পাচ্ছিলাম এর মধ্যে আবার জেনিনের বাউলি তো আছেই! টাংগাইল বাইপাসে ২ জন যাত্রি নেমে যায়! তারা ৬৫০ টাকা ভাড়া দিয়ে এখানে নামছে ।
অথচ ৪০০ টাকা দিয়েও ১জে এসি আর ইসুজু এলটি পাইতো!ফাইভ স্টারের পিছনে চলতে চলতে মায়া হোটেলের সামনে ওভারটেক দেই। এলেংগা পার হলে আমরা ডানে ঢুকি যেহেতু গন্তব্য ধনবাড়ি। শুকতারায় হোটেল বিরতি দেওয়ার কথা থাকলেও সেটা বন্ধ থাকায় এক পাম্পে ছোট বিরতি দেয় যেহেতু রমজান মাস। এর পর সিএনজি,ভ্যান,অটো ইত্যাদি ছোট গাড়ির মাঝেই আমাদের বাস ১০০+ গতিতে ছুটতে থাকে। সামনে দেখা হয় জামালপুরের রাজিব আর এমডি সুপার। তাদের পারাপারি উপভোগ করতে করতে ঘাটাইল যাত্রি নামায়। এর মধ্যে আমাদের ড্রাইভার আংকেল একটা বাসে লুকিং গ্লাস হালকার উপর মেরে দেয়।
এছাড়াও বাজার এলাকায় বডিতে কিছু একটা লাগার সাউন্ড পাই! ড্রাইভার আংকেল রাফ ড্রাইভ করছিলেন এখানে। যাত্রী নামাতে নামাতে এবং ফাকা রাস্তায় টান উঠিয়ে ১১:২০ এর আগেই ধনবাড়ি নামিয়ে দেয়। জানতে পারি ৪ টার ট্রিপে তারা আবার ঢাকা ব্যাক করবেন। বাকি সময় কাটানোর জন্য আমরা ২জন ধনবাড়ির জমিদার বাড়ি ঘুরতে যাই। ঘুরে ফিরে এসে ৩ টার পরেই দেখি ৯৭৭৭ ৪ টার ট্রিপের জন্য প্রস্তুত! এরপর যাত্রিরা চলে আসলে ৪ টার কয়েক মিনিট পর ছেড়ে মধুপুর,ঘাটাইল যাত্রি উঠিয়ে এবং টেনে আসতে আসতে এলেংগা পৌছায়। এলেংগার পর আমাদের দেখা হয় আমার সবচেয়ে প্রিয় ব্যানার আলহামরার সাথে। আলহামরাকে ওভারটেক করার পর এস আই কে ওভারটেক করি। এরপর পুরো রাস্তা ফাকা থাকায় আরিফ আংকেল আরপিএম ফাটানো টান দেন।
১০৬+ গতিতে টানতে টানতে এবং কিছু সেমি-লোকাল ব্যানার ওভারটেক করে চন্দ্রা পৌছাই। সুপারভাইজার আংকেল আগেই বলেছিলেন ইফতার না কিনতে উনিই দিবেন। শ্যামলী ওভারটেক করে বাইপাইল পার হয়ে ইফতারের সময় হলে বামে সাইড করে। সব যাত্রিরা বাহির থেকে ইফতার কিনে আনেন। স্টাফরা মুরি মাখিয়ে আমাদের কে সহ আরও অনেক যাত্রিদের দিয়েছেন মুরি মাখা।
এছাড়াও অনেক পানির বোতল দিয়েছেন ইন্টেক। সব যাত্রিরা ইফতার সেরে নিলে বাস ছেড়ে দেয়। প্রেশারে চলতে চলতে সাভার পার হয়ে স্টাফদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমরা থানা স্ট্যান্ড নেমে যাই কোথাও খেয়ে নেওয়ার জন্য। #বাসের কন্ডিশন:- বাসের বয়স হয়েছে প্রায় দেড় বছর। সেই হিসাবে বাসের কন্ডিশন এখনো প্যাকেট বাসের মতো। ইন্টেরিয়র একদম ফ্রেশ। এসি কুলিং ভালো ছিলো। পুরো রাস্তা মুগ্ধ হয়ে আরপিএম ফাটানো ইঞ্জিন সাউন্ড উপভোগ করেছি ইঞ্জিন ব্রেক সহ। #স্টাফ:- #ড্রাইভার- প্যাকেট কাল থেকে শরিফ আংকেল চালালেও বর্তমানে তার বড় ভাই আরিফ আংকেল চালান। আগে বাসে ঘষামাজা খুজে পাওয়া মুশকিল ছিলো বর্তমানে বেশ কিছু স্ক্র্যাচ চোখে পড়ে। হেল্পারের কাছ থেকে জানতে পারি উনার কাছে বাস আসার পরেই কিছু স্ক্র্যাচ লাগছে। শরিফ আংকেল বাসে একটা দাগ ও নাকি লাগতে দেন না। তাছাড়া ড্রাইভার আংকেল ছিলেন বেশ স্কিল ফুল। ফাকা রাস্তা পেলে তিনি ১০০+ এ টেনেছেন।
পুরো জার্নিতে ফাকা রাস্তাতে আমি স্পিড মিটারের কাটা ১০০ এর নিচে দেখিনি। #হেল্পার- তিনি পুরো রাস্তায় এক্টিভ ছিলেন। সবসময় প্রয়োজনমতো ড্রাইভার সাহেবকে সহযোগিতা করেছেন। মনে হচ্ছিলো তিনি একটি ভুল কল দিলে ড্রাইভার সাহেব মেরে দিবেন #সুপারভাইজার- তার ব্যবহার খুবই ভালো ছিলো। যাত্রিদের সাথে সুন্দরভাবে কথা বলছিলেন। আমাদেরকে ভিডিও করতে সহযোগিতা করেছেন। এমনকি মহিলা যাত্রিরাও " আংকেল আসি তাহলে" বলে নামছিলেন। আমাদেরকেও বিশেষভাবে ইফতারের ব্যাবস্থা করেছেন। সবমিলিয়ে আমাদের জার্নিটি খুবই উপভোগ্য ছিলো।
বি:দ্র: প্রথমবার এরকম বিস্তারিত রিভিয় দিলাম তাই ভুল ক্রটি হতে পারে।
বাস যাত্রী / রিভিউ লেখকের নাম : Tasnim Alam Nabil , আমাকে ফলো করতে আমার নামের উপর ক্লিক করুন এবং ফেইসবুকে যেয়ে ফলো করে দিন।
রিভিউটি কালেক্ট করা হয়েছে : ফেইসবুক ভিত্তিক গ্রুপ Bus Lover থেকে।
যেকোন প্রয়োজনে আমাকে মেইল করুন - ets2ridoy@gmail.com
0 Comments